প্রতিদান কবিতার ব্যাখ্যা - প্রতিদান কবিতার প্রতি লাইনের ব্যাখ্যা
প্রতিদান কবিতার ব্যাখ্যা
‘প্রতিদান’ কবিতায় কবির পরার্থপর চেতনার প্রকাশ ঘটেছে । এই কবিতার মধ্য দিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কবি অন্যের জন্য নিজেকে নিবেদন করার কথা বলা হয়েছে । কারণ পরার্থপরতাই জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য । পরার্থপর মানুষই প্রকৃত সুখী । কবির চিন্তার মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারি যে, সমাজ - সংসারে বিদ্যমান হিংসা - বিভেদ, বৈষম্য, প্রতিশোধ আর প্রতিহিংসা দূর করতে হবে । তা হলেই সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে । কারণ মানুষ সহনশীল হলেই সুন্দর পৃথিবী নির্মাণ করা সম্ভব । কবি তাই তাঁর প্রতি অন্যায়, অবিচার ও হিংসা করা ব্যক্তিকে ক্ষমা করে বুকে টেনে নেন । কারণ তিনি সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের পৃথিবী প্রত্যাশা করেন ।
প্রতিদান কবিতার প্রতি লাইনের ব্যাখ্যা
ব্যাখা: কবির ঘর যে ভেঙ্গে দিয়েছে কবি তার ঘর বেধে দিয়ে তাকে আপন করতে চান । যে কবিকে বাড়ি ছাড়া করেছে কবি তাকেই পথে পথে খুঁজেন । যে কবির এতই ক্ষতি করেছে যে কবি দুশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারছে না; তার জন্য কবি প্রয়োজনে রাত জেগে জেগে তার উপকার করতে চান । অর্থাৎ কবির এখানে পরোপকারী মনোভাব ফুটে উঠেছে । শত্রুর উপকার করার মাধ্যমে শত্রুকে বন্ধুতে রুপান্তরিত করতে চেয়েছেন ।
ব্যাখা: কবির কূল যে ভেঙ্গে দিয়েছে অর্থাৎ কবির সুখ শান্তির উৎস যে নষ্ট করেছে তার কূল কবি বেধে দিবেন । যে কবির বুকে আঘাত করেছেন অর্থাৎ কষ্ট দিয়েছেন তার জন্য কবি কাঁদতে চান । যে কবির বুকে বিষমাখা তীর মেরেছে অর্থাৎ কবিকে কটু কথা বলেছেন; কবি তার জন্য ভালোবাসার গান গেয়ে তার হৃদয় জয় করতে চান । যে কবিকে কাঁটা দিয়েছেন অর্থাৎ কবির জীবনে চলার পথে বাঁধার সৃষ্টি করেছেন তাকে কবি আপন করার চেষ্টা করেন ।
ব্যাখা: যে কবির এতই ক্ষতি করেছেন যে কবির মনে হচ্ছে যে তিনি মৃত প্রায় বা কবরে চলে গিয়েছেন তাকেও কবি ভালোবাসার ফুল দিয়ে আপন করে চান । যে কবিকে নিষ্ঠুর বা কটু কথা বলেছেন তার সম্মানার্থে ভালো কথাবার্তার ফুলঝড়ি সাজিয়ে তাকে আপন করার চেষ্টা করেছেন । এখানে কবি শত্রুর সাথে আপোষ করে ভালোবাসার মাধ্যমে শত্রুর হৃদয় জয় করার কথা ব্যক্ত করেছেন ।
মনের রঙের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url