ধর্ষিতা বউ - ০২ পর্ব । Uponnash, Love Story - Moner Rong

ধর্ষিতা বউ - ০২ পর্ব । Bangla Uponnash, Love Story - Moner Rong রোমান্টিক ভালবাসার গল্প Choto Golpo Book ছোট গল্প premer uponnash choto golpo pdf free download status

ধর্ষিতা বউ - ০২ পর্ব । Uponnash, Love Story - Moner Rong



ধর্ষিতা বউ - ০২ পর্ব

প্রাপ্তি প্যাকেটটা খুলে দেখে একটা মলম ও বুঝে নিলো এটা হাতে লাগানোর জন্য সায়ান আনিয়েছে । প্রাপ্তি  ঔষধ লাগিয়ে নিলো হাতে তারপর শুয়ে পড়লো! মলমটা খুব ঠান্ডা জ্বালাপোড়া খুব কমে গেছে ।  কিছুটা আরামদায়ক লাগছে ।

সকালে উঠে দেখে ব্যথা অনেকটাই কমে গেছে ।

প্রাপ্তি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা বানিয়ে নিলো তারপর সায়ানের রুমের দিকে গেলো  গিয়ে দেখে সায়ান ঘুমাচ্ছে এখনো ! কিছুক্ষন প্রাপ্তি দাঁড়িয়ে দেখলো সায়ানের দিকে আর রাতের কথা ভাবছিলো । যতটা খারাপ ভেবেছি ওতটা খারাপ না সায়ান । হঠাৎ করেই সায়ানের ঘুম ভেঙে গেলো প্রাপ্তি চোখ নামিয়ে ফেলল । সায়ান বলল

- কিরে এখানে কি করিস?

- না মানে কিছু না ।

- কয়টা বাজে?

- :২০ বাজে এখন ।

- ডেকে দিলি না কেনো আমাকে? আমার কাজ আছে আজকে ।

- আমি কি জানতাম নাকি !!

- আমার কাপড়গুলা আয়রন করে রাখ আমি শাওয়ারে যাচ্ছি ।

প্রাপ্তি কাপড়গুলো আয়রন করে রাখলো । তারপর সায়ান নাস্তা করে অফিসে চলে গেলো । সায়ান বাসায় আসলেই মেয়েদের সাথে ফোন কথা বলে আর প্রয়োজন হলে প্রাপ্তিকে বিছানার সঙ্গী বানায় ।

 

পুরনো কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে প্রাপ্তির চোখ লেগে গেলো টেরই পেলো না ।

হঠাৎ করে কলিং বেল বেজে উঠলো প্রাপ্তি দরজা খুলে দেখে সায়ান দাঁড়িয়ে আছে । সায়ান ঘরে ঢুকেই বলল

যাও শাড়ি পরে আসো । আমরা আজকে আকাশ দেখবো।

প্রাপ্তি তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলো না ও দাঁড়িয়ে রইলো সায়ানের সামনে । সায়ান বলে,

শুনতে পাও নি কি বলেছি, জলদি যাও, আজকের চাঁদটা খুব সুন্দর আলো ছড়িয়েছে । ছাঁদে গিয়ে জোছনা দেখবো একসাথে তুমি একটু সেজেগুজে আসো ।

প্রাপ্তি নীল শাড়ী আর লাল চুড়ি পরে নিলো । চুল খুলে চিরুনি দিয়ে আচড়াচ্ছিলো ।এমন সময় সায়ান এসে বলল

- চুলে খোপা করো ।

- কেনো? খোলা চুলেই তো ভালো লাগে আমার কাছে ।

- আরে করো না।

তারপর প্রাপ্তি চুলে খোপা করে নিলো সুন্দর করে পেছন থেকে সায়ান এসে ওর খোপায় কাঁঠবেলি ফুল গুজে দিলো আর প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে বলল,

বড্ড ভালোবাসি তোমায় ।

বলে সায়ান প্রাপ্তির কপালে চুমো খেতে নিলো এমন সময়

-প্রাপ্তি....প্রাপ্তি.. এই প্রাপ্তি.....

সায়ানের ডাকে ঘুম ভেঙে গেলো প্রাপ্তির । উফফ স্বপ্ন ছিলো এটা !! ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে :২৫ বাজে এতো রাতে সায়ান ডাকছে কেনো !!

যাক গে প্রাপ্তি সায়ানের রুমে গেলো ।

- কিরে এতক্ষণ ধরে ডাকছি শুনতে পাস না? কানে তুলো দিয়ে রাখিস নাকি?

- না আসলে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ।

- হ্যাঁ সারাদিন ঘুম, খাওয়া ছাড়া আর কিছু কাজ নাই তোর?

- এতো রাতে আমি কি করবো আর না ঘুমিয়ে?

- রিয়াকে একটা ড্রেস দে । ওর ড্রেসটাতে পানি পড়ে ভিজে গেছে ।

- বাবু আমি এসব ক্ষ্যাত ড্রেস পরবোনা । (রিয়া)

- তাহলে কি করবে এখন? (সায়ান)

- তোমার শার্ট দাও পরে নিবো । (রিয়া)

- আচ্ছা ঠিক আছে (সায়ান)

- এই শুন আমার ড্রেসটা ওয়াশ করে দে । সকালে আমার যেতে হবে বাসায় । (রিয়া)

- আচ্ছা (প্রাপ্তি)

প্রাপ্তি এসে রিয়ার ড্রেসটা ধুঁয়ে শুঁকাতে দিলো । বাড়ি কথা খুব মনে পড়ছে । সেই কবে মায়ের সাথে দেখা করে এসেছি আর যাওয়া হয়নি । সকালে সায়ানকে বলবো বাবা মায়ের সাথে দেখা করতে যাবো ।

 

সকালে নাস্তা বানিয়ে দিলো । রিয়া আর সায়ান নাস্তা করে নিলো । রিয়া চলে গেলো নাস্তা করেই যাওয়ার সময় বলে গেলো

আমার সায়ানের দিকে একদম বাজে নজর দিবিনা । ওর আশে পাশে কম যাবি ।

প্রাপ্তি রিয়ার কথায় কান দেয়নি । রিয়ে চলে যাওয়ার পরে প্রাপ্তি সায়ানকে বলল

- অনেকদিন বাসায় যাইনা যদি আপনি অনুমোতি দেন তাহলে আমি একবার বাবা মায়ের সাথে দেখা করে আসতে চাই ।

- আমার খাওয়া দাওয়া দেখবে কে? না খেয়ে থাকবো?

- আমি রান্না করে দিয়ে সকালে যাবো আবার বিকালেই চলে আসবো । থাকবো না ।আপনি তো ওই সময়টা অফিসেই থাকেন বা অন্য কাজে বাইরে থাকেন । আপনি বাসায় আসার আগেই আমি চলে আসবো ।

- আচ্ছা আমি অফিসে যাওয়ার সময় তোকে নামিয়ে দিয়ে আসবো কিন্তু আমি বাসায় এসে যেনো তোকে পাই ।

- পাবেন । আমি ওয়াদা করছি আমি আপনার ফেরার আগেই বাসায় চলে আসবো । থাকবো না ।

পরে দুইজনেই খাওয়া দাওয়া শেষ করে রেডি হয়ে নিলো ।

প্রাপ্তি নীল রঙের একটা শাড়ী, হাত ভর্তি লাল রেশমী চুড়ি পরে নিলো, একটা স্টোনের ছোট্ট টিপ পড়লো, চোখে গাঢ় করে কাজল, ঠোঁটে হালকা গোলাপি রঙের লিপস্টিক  লাগালো আর চুলগুলো খোপা করে নিলো ওর ফর্সা শরীরে এই সাজে ওকে দারুন লাগছিলো ।

প্রাপ্তি গতকালের ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারলো না । সায়ান ফোন কথা বলে মেয়েদের সাথে, ফ্লার্ট করে, ড্রিংক করে, সিগারেট খায় সব মেনে নিয়েছিলো কিন্তু রিয়ার সাথে এইভাবে শারীরিক সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নিতে পারলো না । তাই সিদ্ধান্ত নিলো যে করেই হোক সায়ানকে ওর প্রতি টেনে আনবেই আর এটা হলো তার শুরু ।

প্রাপ্তি রেডি হয়ে যখন সায়ানের সামনে আসলো তখন সায়ান অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো । তারপর বলল

- এতক্ষন লাগে তোর রেডি হতে?

- মাফ করবেন দেরি হয়ে গেছে আর টা মিনিট দিন । আমি বোরকা পরে নেই প্লিজ ।

- আবার বোরকা পরবি কেনো? আমার গাড়িতে করেই তো যাবি ।বোরকা পরতে হবে না ।

- আচ্ছা চলুন তাহলে।

- আর শুন, চুল খুলে রাখ । তাতেই বেশি ভালো লাগবে ।

প্রাপ্তি মনে মনে খুশি হচ্ছিলো সায়ানের ব্যাবহার দেখে ভাবছে-আমি আবার স্বপ্ন দেখছি না তো !!

তাই নিজের হাতে একটা চিমটি কেটে দেখলো নাহ সত্যি ।স্বপ্ন না ।

তারপর তারা গাড়িতে উঠলো । যাওয়ার পথে হঠাৎ করেই সায়ানের চোখ পড়লো প্রাপ্তির হাতের পোড়া দাগের উপরে অনেকটা পুড়েছে মেয়েটার ।সায়ান বলল

- তোর হাত দেখি  অনেকটাই পুড়ে গেছে । সেদিন শফিক মলম দিয়ে যায়নি?

- দিয়েছিলো । আমি লাগিয়েছিলামও কিন্তু সেদিন রাতে অনেক জোরে ঘষা লেগে চামড়া উঠে যাওয়ার কারণে দাগটা পড়ে গেছে ।

- ওহ বুঝেছি । বাসায় ভিনেগার আছে লাগিয়ে নিস । দাগ চলে যাবে ।

- আচ্ছা।

প্রাপ্তি  তার কানকে বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না । এটা কি সত্যি সেই সায়ান যে কিনা কাল রাতেও একটা মেয়ের সাথে যৌন লালসায় লিপ্ত ছিলো !! যা কিনা আমাকে এক ফোটাও তোয়াক্কা করতো না । তারমানে মা ঠিকই বলেছে ছেলেদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা একটা মেয়ে । যে সহজেই একটা ছেলেকে বশে নিয়ে আসতে পারে ।

প্রাপ্তির বাসা এসে পড়েছে । সায়ান প্রাপ্তিকে নামিয়ে দিলো । প্রাপ্তি যাওয়ার সময় সায়ান পেছন থেকে ডাক দিয়ে বলল

প্রাপ্তি এইদিকে আয় তো একটু ।

প্রাপ্তি তাড়াতাড়ি আসলো ।

কিছু বলবেন?

সায়ান প্রাপ্তির হাতে একটা স্মার্ট ফোন দিয়ে বলল

এই ফোনে দুইটা সিম লাগানো আছে । আজকে থেকে এই ফোন টা তুই ইউজ করবি । এখানে দুটো সিমেই টাকা লোড করা আছে ।

এইটুকু বলেই সায়ান অফিসে চলে গেলো ! প্রাপ্তি দাঁড়িয়ে রইলো অবাক হয়ে সায়ানের গাড়ির দিকে । গাড়িটি অদৃশ্য হওয়ার পরে প্রাপ্তি বাসার ঢুকে গেলো ।

 

বাসায় ঢুকতেই প্রাপ্তির মা তাকে গলায় জড়িয়ে ধরলো কতদিন পরে ওর সাথে দেখা হয়েছে । প্রাপ্তির ছোট ভাই দৌঁড়ে এসে আপু বলে প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরলো । বছর / হবে প্রান্ত নাম । প্রাপ্তির জান এটা । প্রাপ্তির বাবা তখন বাসায় ছিলেন না । ব্যবসার কাজে ঢাকার বাইরে ছিলেন । তারপর প্রাপ্তির মা প্রাপ্তি কে নিয়ে রুমে গেলো মা মেয়ে মিলে অনেক গল্প করলো !

হঠাৎ করেই প্রাপ্তির হাতের পোড়া দাগটার উপরে ওর মায়ের নজর পড়লো তিনি জিজ্ঞেস করলেন,

- তোর হাতে কি হয়েছে? এইভাবে দাগ পড়ে গেলো কেনো?

- আরে মা কিছু না । রান্নার সময় তেল পড়ে গেছিলো ।

- কিছু না মানে কি! তুই দেখ তো কতটা ছড়িয়ে গেছে পোড়াটা ।

- কিছু হবে না মা । ঠিক হয়ে যাবে ।

- কিছু লাগাস নি এটাতে?

- লাগিয়েছিলাম ও একটা মলম এনে দিয়েছিলো সেটাই লাগিয়েছি ।

- এখন এই দাগটা কিভাবে যাবে? অনেকটাই কালচে হয়ে গেছে ।

- চলে যাবে মা বলেছে ভিনেগার লাগালে দাগ চলে যাবে ।

- হুম বাসায় আছে লাগিয়ে নিস ।

- আচ্ছা ।

মা মেয়ে একসাথে দুপুরের রান্নার আয়োজন করলো ! কতো খুনসুটি করলো মা মেয়ে একসাথে কি যেনো মনে করতেই প্রাপ্তির মা ওকে জিজ্ঞেস করলো,

- সায়ান তোকে ভালোবাসে তো মা?

- হ্যাঁ মা সায়ান আমাকে অনেক ভালোবাসে ।

- তুই আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছিস না তো তোর মুখ থেকে কেমন যেনো মনে হচ্ছে ।

- কি যে বলো না মা ও আমাকে অনেক ভালোবাসে । এই দেখো আজকে আমাকে এই ফোন টা দিলো দেখো কতো দামী সিমও আছে দুইটা ।

- এগুলো দিলেই ভালোবাসে?

- আরে না মাও এমনিতেও আমার অনেক যত্ন নেয় । অনেক আদর করে আমাকে । আচ্ছা মা বাবা কবে আসবে?

- আরো দিন পরে আসবে ।

- ওহ আমি তো বিকালেই চলে যাবো ।

- কেনো? থাকবি না কয়দিন?

- না মা ওর খাওয়া দাওয়া কষ্ট হবে । আমাকে চলে যেতে হবে ।

- তুই কিন্তু আমার কথা এড়িয়ে যাচ্ছিস বারবার ।

- কি বলো মা এসব? এড়িয়ে যাবো কেনো?

- আমার দোহাই তুই সত্যি করে বল কি হয়েছে ।

- মা !!!!

প্রাপ্তির চোখে পানি টলমল করছে প্রাপ্তির মায়ের আর বুঝতে বাকী রইলো না যে তার মেয়ে ভালো নেই । প্রাপ্তি বলল,

- আচ্ছা মা ধর্ষণ কাকে বলে??

- মানে? হঠাৎ এই প্রশ্ন কেনো?

- কারো মনের বিরুদ্ধে গিয়ে তার সাথে জোরাজুরি করে তার শরীরকে উপভোগ করার নাম ধর্ষণ না??

- হ্যাঁ । কিন্তু তুই এগুলা কেনো জিজ্ঞেস করছিস?

- জানো মা, আমি না নিয়মিত বৈধ ভাবে আমার স্বামী দ্বারা ধর্ষিত হই । আমি সায়ানের ধর্ষিতা বউ । (একটা কষ্টের হাসি মুখে নিয়ে কথা টা বলল)

- তুই এতদিন আমাদেরকে কিছু জানাস নি কেনো?

- জানিয়ে কি লাভ হবে মা? সবসময় দাদীকে, তোমাকে বলতে শুনেছি বিয়ের পরে স্বামীই মেয়েদের সব । আগে আমি ভাবতাম পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাঁড়াবো ।  কারো উপরে নির্ভর করে থাকতে হবেনা আমাকে । স্বামী ভালো না হলেও নিজের পথ নিজে খুজে নিতে পারবো । কিন্তু এই বিয়ে জিনিসটা আমার পুরো ধারনা টা কে বদলে দিলো । আমাকে বুঝিয়ে দিলো সংসার, স্বামী যেমনই হোক না কেনো এটাই একটা মেয়ের শেষ ঠিকানা । তবে আমি সায়ানকে আমার করে নিবোই যে কোনো মুল্যে । আমি তো আল্লাহ্ রহমতে কোনো দিক থেকে  কম না । আল্লাহ্তো আমাকে সব দিয়েছেন ! তাহলে আমি কেনো পারবোনা আমার স্বামীকে নিজের করে নিতে ! আমাকে পারতেই হবে আমি পারবো ।

প্রাপ্তির মা কথাগুলো শুনে বলল

- আমার ছোট প্রাপ্তিটা কতো বড় হয়ে গেলো । কতকিছু বুঝে ফেলেছে । আল্লাহ্ভরসা মা, আমার দোয়া তোর সাথে রইলো । সব ঠিক হয়ে যাবে দেখিস !

- হ্যাঁ মা দোয়া করো ।

- মায়ের মনকে কখনো ফাঁকি দেওয়া যায় না রে মা । মায়েরা সবই বুঝে যায় তাত কোন সন্তান কি সমস্যায় আছে । এটা তাদের একটা আলাদা শক্তি ।

- হ্যাঁ মা জানি । আচ্ছা মা দাদীকে দেখছি না । দাদী কোথায়? এতো সময় হলো আসলাম এখনো খবরই নাই ।

- তোর দাদী কয়দিনের জন্য গাজীপুরে গেছে । মন ছুঁটেছে অনেক তাই তোর বাবা সাথেই গেছে । তোর বাবা সেখানে দিয়ে তারপর কাজে গেছে ।

-ওহ

দুপুরে প্রাপ্তির ফোন একটা কল আসলো । রিসিভ করে বুঝতে পারলো সায়ান । সায়ান বলল,

- কি করো?

- এইতো মায়ের সাথে গল্প করছি । আপনি কি করেন?

- এইতো অফিসের কাজকর্ম করছি আর কি । তেমন কাজ নেই খালি জরুরি ফাইল গুলোতে সাইন করে দেওয়া, কর্মচারীদেরকে কাজ বলে দেওয়া এইতো ।

- ওহ

- হুম । আচ্ছা শুনো..

- হুম বলেন।

- না কিছুনা । দুপুরে খেয়েছো?

- হুম । আপনি খেয়েছেন?

- হুম দুইটা কলা আর পাউরুটি ।

- কেনো?

-  এখানে আজকে খাবার আসেনি  তাই।

- ওহ ! আচ্ছা এখন রাখি ।

- ওকে । বাই ।

- আল্লাহ্হাফেজ ।

- আল্লাহ্হাফেজ ।

বলে প্রাপ্তি ফোন রেখে দিলো তার মাথায় অনেক প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিলো । হঠাৎ করে সায়ানের এই পরিবর্তন, আমার প্রতি কেয়ার, আমাকে মোবাইল দেওয়া, ফোন দেওয়া, কিছুই বুঝতে পারছি না ।

বিকালে প্রাপ্তির যাওয়ার সময় হয়ে গেছে ও রেডি হয়ে নিলো । ওর মা বলল,

- কয়টা দিন থেকে যা না রে মা ।

- না মা ৪ টা বেজে গেছে । ৬ টার মধ্যেই সায়ান বাসায় এসে পড়বে । আমার ফিরতে দেরি হলে ওর খাওয়া দাওয়া সমস্যা হবে ।

- আমি বুঝি রে মা । কিন্তু কিছু করার নেই এই মুহুর্তে । (কাঁদো কাঁদো গলায়)

- একদম কাঁদবে না তুমি । তুমি ভরসা রাখো তোমার মেয়ের প্রতি । দেখো আমি সব ঠিক করে নিবো । ইনশাআল্লাহ । আর আমার মনে হচ্ছে আমার প্রতি একটু হলেও ওর ভেতরে ভালোবাসা আছে মা । আজকে ওর মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখেছি আমি । বাকীটা আল্লাহ্ভালো জানেন । আমাকে হাসিমুখে বিদায় দাও মা ।

তারপর মায়ের থেকে হাসিমুখে বিদায় নিলো প্রাপ্তি ।

রিকশা দিয়ে গেলে ৩০ মিনিট  লাগবে বাসায় পৌঁছাতে । প্রাপ্তি একটা রিকশা নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলো ।

এদিকে প্রাপ্তির যাওয়ার ২০ মিনিট পরেই সায়ান প্রাপ্তিদের বাড়িতে আসলো প্রাপ্তিকে পিক করার জন্য । প্রাপ্তির মা সায়ানকে দেখেই বলল,

- বাবা তুমি? আসো বাবা ভেতরে আসো ।

- না মামী যাবো না । প্রাপ্তিকে বলেন রেডি হয়ে আসতে আমি নিচে দাঁড়াচ্ছি ।

- প্রাপ্তি তো অনেক্ষন আগেই চলে গেছে বাবা । এইতো ২০/২৫ মিনিত হবে ।

- ওহ । আচ্ছা মামী তাহলে আজকে আসি । আবার আসবো নি অন্য একদিন ।

সায়ানের কথাবার্তা শুনে প্রাপ্তির মা একটু স্বস্তি পেলো হয়তো প্রাপ্তি ঠিকই বলেছে । সায়ানের মধ্যে পরিবর্তন আসছে ।

সায়ান বাসায় পৌঁছে :৫০ এ বাসায় গিয়ে দেখে প্রাপ্তি এখনো বাসায় আসেনি । শকিককে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো-তোর ভাবীকে আসতে দেখেছিস?

- না ভাইজান । দেখি নাই । ভাবী আহে নাই ।

- ওহ আচ্ছা ।

সায়ান কল এর উপর কল দিয়েই যাচ্ছিলো দুটো নাম্বারেই । দুটো নাম্বারই বন্ধ । সায়ান অনেক চিন্তায় পড়ে গেলো । কোথায় চলে গেলো মেয়েটা !! এদিকে সন্ধ্যা হয়ে আসছে প্রাপ্তির কোনো খোঁজ নেই । কিছু না বলে কোথায় যাবে ও ওর কোনো বিপদ হয়নি তো !!!

অস্থির হয়ে পড়েছে সায়ান । তাড়াহুড়ো করে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো প্রাপ্তিকে খুঁজতে । যাওয়ার সময় শফিককে বলে গেলো প্রাপ্তি ফিরে আসলে যেনো তাকে কল দেয় ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url