ইসলামিক উপদেশ SMS - মোটিভেশনাল উক্তি - বানী হাদিস মূলক গল্প

ইসলামিক উপদেশ sms ইসলামিক উপদেশ পিকচার ইসলামিক কথা ইসলামিক ভালোবাসার উক্তি ইসলামিক উপদেশ মূলক স্ট্যাটাস ইসলামিক বানী হাদিস ইসলামিক উপদেশ মূলক গল্প ইসলামিক মোটিভেশনাল উক্তি


ইসলামিক উপদেশ SMS - মোটিভেশনাল উক্তি - বানী হাদিস মূলক গল্প
ইসলামিক উপদেশ SMS - মোটিভেশনাল উক্তি - বানী হাদিস মূলক গল্প

ইসলামিক উপদেশ SMS - মোটিভেশনাল উক্তি - বানী হাদিস মূলক গল্প


عَنْ تَمِيْمِ الدَّارِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ الدِّيْنُ النَّصِيحَةُ ثَلَاثًا. قُلْنَا لِمَنْ؟ قَالَ لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُوْلِهِ وَلِأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِيْنَ وَعَامَّتِهِمْ.


তামীম আদ-দারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘দ্বীন হচ্ছে উপদেশ’। অর্থাৎ যথাযথভাবে কল্যাণ কামনা করা। কথাটি নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনবার বললেন। আমরা বললাম, কার জন্য? তিনি বললেন, ‘আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসূলের জন্য, মুসলিম নেতাদের জন্য এবং সাধারণ মুসলমানের জন্য (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৬৬) ।


عَنْ جَرِيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ بَايَعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم عَلَى إِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ.


জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে বায়’আত বা শপথ করেছি ছালাত প্রতিষ্ঠা করার, যাকাত প্রদান করার এবং সকল মুসলমানের কল্যাণ কামনা করার (বুখারী হা/৫৭, ৫২৪; মুসলিম হা/৫৬)।



عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِنَّ اللهَ يَرْضَى لَكُمْ ثَلاَثاً وَيَسْخَطُ لَكُمْ ثَلاَثاً يَرْضَى لَكُمْ أَنْ تَعْبُدُوْهُ وَلاَ تُشْرِكُوْا بِهِ شَيْئاً وَأَنْ تَعْتَصِمُوْا بِحَبْلِ اللهِ جَمِيْعاً وَلاَ تَفَرَّقُوْا وَأَنْ تُنَاصِحُوْا مَنْ وَلاَّهُ اللهُ أَمْرَكُمْ وَيَسْخَطُ لَكُمْ قِيْلَ وَقَالَ وَإِضَاعَةُ الْمَالِ وَكَثْرَةُ السُّؤَالِ.


আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তোমাদের তিনটি কাজে সন্তুষ্ট হন এবং তিনটি কাজে অসন্তুষ্ট হন। (১) যখন তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে বিন্দুমাত্র শরীক করো না। (২) আল্লাহর বিধানকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধর আর বিচ্ছিন্ন হও না এবং (৩) আল্লাহ যাকে তোমাদের কাজের নেতা হিসাবে নির্বাচন করেন, তার জন্য তোমরা পরস্পরে কল্যাণ কামনা কর। এ তিনটি কাজে আল্লাহ তোমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হন। আর তোমাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হন- (১) অপ্রয়োজনীয় কথা বললে (২) সম্পদ নষ্ট করলে এবং (৩) অনর্থক বেশী প্রশ্ন করলে’ (আহমাদ হা/৮৭৮৫; ইবনু হিব্বান হা/৩৩৮৮)।



عَنْ إبْنِ عَبَّاسٍ قَالَ إِنَّ وَفْدَ عَبْدِ الْقَيْسِ لَمَّا أَتَوُا النَّبِىَّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ مَنِ الْقَوْمُ أَوْ مَنِ الْوَفْدُ قَالُوا رَبِيعَةُ. قَالَ مَرْحَبًا بِالْقَوْمِ أَوْ بِالْوَفْدِ غَيْرَ خَزَايَا وَلاَ نَدَامَى. فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّا لاَ نَسْتَطِيعُ أَنْ نَأْتِيَكَ إِلاَّ فِى شَهْرِ الْحَرَامِ، وَبَيْنَنَا وَبَيْنَكَ هَذَا الْحَىُّ مِنْ كُفَّارِ مُضَرَ، فَمُرْنَا بِأَمْرٍ فَصْلٍ، نُخْبِرْ بِهِ مَنْ وَرَاءَنَا، وَنَدْخُلْ بِهِ الْجَنَّةَ. وَسَأَلُوهُ عَنِ الأَشْرِبَةِ. فَأَمَرَهُمْ بِأَرْبَعٍ، وَنَهَاهُمْ عَنْ أَرْبَعٍ، أَمَرَهُمْ بِالإِيمَانِ بِاللهِ وَحْدَهُ. قَالَ أَتَدْرُونَ مَا الإِيمَانُ بِاللهِ وَحْدَهُ. قَالُوا اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ، وَإِقَامُ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ، وَصِيَامُ رَمَضَانَ، وَأَنْ تُعْطُوا مِنَ الْمَغْنَمِ الْخُمُسَ. وَنَهَاهُمْ عَنْ أَرْبَعٍ عَنِ الْحَنْتَمِ وَالدُّبَّاءِ وَالنَّقِيرِ وَالْمُزَفَّتِ. وَرُبَّمَا قَالَ الْمُقَيَّرِ. وَقَالَ احْفَظُوهُنَّ وَأَخْبِرُوا بِهِنَّ مَنْ وَرَاءَكُمْ.


আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


আব্দুল ক্বায়েম গোত্রের প্রতিনিধিদল যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দরবারে এসে পৌঁছালো, তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কোন গোত্র অথবা কোন্ প্রতিনিধিদল (রাবী সন্দেহ)? তারা বলল, রবী’আহ গোত্র। তিনি বললেন, তোমাদের গোত্রকে অথবা তোমাদের প্রতিনিধিদলকে মুবারকবাদ যা অপমানহীন ও অনুতাপবিহীন। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ‘হরম’-এর (যুদ্ধ নিষিদ্ধ) মাসগুলি ব্যতীত আমরা আপনার নিকটে আসতে পারিনা। কেননা আমাদের ও আপনার মাঝে কাফের ‘মুযার’ গোত্রটি অন্তরায় হয়ে আছে। অতএব আপনি আমাদেরকে এমন পরিষ্কার চূড়ান্ত কিছু বিষয় নির্দেশ করুন, যা আমরা আমাদের বাকী লোকদের গিয়ে বলতে পারি ও যার দ্বারা আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। রাবী বলেন, তারা তাঁকে পানপাত্র সমূহের ব্যাপারেও জিজ্ঞেস করল। জবাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে চারটি বিষয়ে নির্দেশ দিলেন ও চারটি বিষয়ে নিষেধ করলেন। তিনি তাদেরকে নির্দেশ দিলেন কেবলমাত্র এক আল্লাহর উপরে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য। অতঃপর বললেন, তোমরা কি জানো কেবলমাত্র আল্লাহর উপরে বিশ্বাস স্থাপনের অর্থ কী? তারা বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক জ্ঞাত। অতঃপর ছালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা ও রামাযানের ছিয়াম পালন করা। এতদ্ব্যতীত জিহাদলব্ধ গণীমতের মাল থেকে এক পঞ্চমাংশ তোমরা নেতার নিকটে জমা দিবে।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে চারটি পাত্র সম্পর্কে নিষেধ করলেন, যা হ’ল : (১) ‘হান্তাম’ অর্থাৎ শরাব তৈরীর কলসী যার গর্দান সবুজ ও লাল রংয়ের (২) ‘দুব্বা’ অর্থাৎ লাউ বা চাল কুমড়ার শুকনা খোল দ্বারা প্রস্তুত মদ্যভাণ্ড (৩) ‘লাক্বীব’ অর্থাৎ গাছের গুঁড়িতে গর্ত করে সেখানে শরাব বানানোর পাত্র বিশেষ (৪) ‘মোযাফফাত’ অর্থাৎ আলকাতরা’ বা অনুরূপ গাঢ় তৈলজাতীয় বস্তু দ্বারা মোড়ানো মদ্যপাত্র বিশেষ। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে বললেন, তোমরা এগুলি বিষয় স্মরণ রাখবে ও তোমাদের বাকী লোকদের জানিয়ে দিবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৭; বাংলা মিশকাত হা/১৬)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ছাহাবীগণ শরী’আত শোনার জন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট আসতেন এবং সে অনুপাতে আমল করে জান্নাত পাওয়ার আকাংখা পোষণ করতেন।



عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم وَحَوْلَهُ عِصَابَةٌ مِنْ أَصْحَابِهِ بَايِعُونِى عَلَى أَنْ لاَ تُشْرِكُوا بِاللهِ شَيْئًا، وَلاَ تَسْرِقُوا، وَلاَ تَزْنُوا، وَلاَ تَقْتُلُوا أَوْلاَدَكُمْ، وَلاَ تَأْتُوا بِبُهْتَانٍ تَفْتَرُونَهُ بَيْنَ أَيْدِيكُمْ وَأَرْجُلِكُمْ، وَلاَ تَعْصُوا فِى مَعْرُوفٍ، فَمَنْ وَفَى مِنْكُمْ فَأَجْرُهُ عَلَى اللهِ، وَمَنْ أَصَابَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَعُوقِبَ فِى الدُّنْيَا فَهُوَ كَفَّارَةٌ لَهُ، وَمَنْ أَصَابَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا ثُمَّ سَتَرَهُ اللهُ، فَهُوَ إِلَى اللهِ إِنْ شَاءَ عَفَا عَنْهُ، وَإِنْ شَاءَ عَاقَبَهُ. فَبَايَعْنَاهُ عَلَى ذَلِكَ.

ওবাদাহ বিন ছামেত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


একদা একদল ছাহাবী দ্বারা আবেষ্টিত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে বললেন, তোমরা আমার নিকটে বায়’আত কর এ বিষয়ে যে, (১) তোমরা আল্লাহর সাথে অন্য কিছুকে শরীক করবে না (২) চুরি করবে না। (৩) যেনা করবে না (৪) তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না (৫) কারু প্রতি অপবাদ দিবে না (৬) মা’রূফ তথা শরী’আত সংগত বিষয়ে অবাধ্যতা করবে না। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এসব অঙ্গীকার পূর্ণ করবে, তার পুরস্কার আল্লাহর নিকটে রয়েছে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি এসবের কোন একটি করবে, তার জন্য যদি দুনিয়াতে (আইন সঙ্গতভাবে) শাস্তি হয়, তবে সেটা তার জন্য কাফফারা হবে (এজন্য আখেরাতে পুনরায় শাস্তি হবে না)। আর যে ব্যক্তি উক্ত পাপসমূহের কোন একটি করেছে, অথচ আল্লাহ তা ঢেকে দিয়েছেন (বা দুনিয়ায় কোন শাস্তি হয়নি), তাহলে সে বিষয়টি আল্লাহর উপরে নির্ভর করে। তিনি ইচ্ছা করলে উক্ত অপরাধ মাফ করতে পারেন, শাস্তিও দিতে পারেন। রাবী বলেন, আমরা এসকল কথার উপরে তাঁর নিকটে বায়’আত করলাম (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৮)। অত্র হাদীছে বুঝা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে কথাগুলি বলতেন সে কথাগুলি মেনে চলার জন্য ছাহাবীদের নিকট থেকে ওয়াদা বা অঙ্গীকার নিতেন। কোন কোন ছাহাবী রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মুখ থেকে কিছু শুনে বলতেন, وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَا أَزِيْدُ عَلَى هَذَا شَيْئًا وَلَا أَنْقُصُ مِنْهُ. ‘আল্লাহর কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যা শুনলাম তার কম-বেশী করব না’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৪)।


ছাহাবীগণ জান্নাতে প্রবেশের এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের আমল শুনতে চাইতেন (তিরমিযী, মিশকাত হা/২৯, হাদীছ ছহীহ)।



عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَكُوْنُ فِيْ آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُوْنَ كَذَّبُوْنَ يَأتُوْنَكُمْ مِنَ الأحَادِيْثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أنْتُمْ وَلاَ أبَائُكُمْ فَإيَّاكُمْ وَ إيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّوْنَكُمْ وَلاَ يُفْتِنُوْنَكُمْ.


আবু হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘শেষ যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। তারা তোমাদের নিকট এমন সব অলীক কথা-বার্তা উপস্থিত করবে, যা না তোমরা শুনেছ না তোমাদের বাপ-দাদা শুনেছে। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে বেঁচে থাকো এবং তাদেরকে তোমাদের থেকে বাঁচাও। অর্থাৎ সম্পূর্ণরূপে বিরত থাক। যাতে তোমাদের পথভ্রষ্ট করতে না পারে এবং তোমাদের বিপথগামী করতে না পারে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১৫৪)।


عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كُنَّا عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَضَحِكَ فَقَالَ هَلْ تَدْرُوْنَ مِمَّ أَضْحَكُ. قَالَ قُلْنَا اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ. قَالَ مِنْ مُخَاطَبَةِ الْعَبْدِ رَبَّهُ يَقُوْلُ يَا رَبِّ أَلَمْ تُجِرْنِىْ مِنَ الظُّلْمِ قَالَ يَقُوْلُ بَلَى. قَالَ فَيَقُوْلُ فَإِنِّىْ لاَ أُجِيْزُ عَلَى نَفْسِىْ إِلاَّ شَاهِدًا مِنِّىْ قَالَ فَيَقُوْلُ كَفَى بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ شَهِيْدًا وَبِالْكِرَامِ الْكَاتِبِيْنَ شُهُوْدًا قَالَ فَيُخْتَمُ عَلَى فِيْهِ فَيُقَالُ لأَرْكَانِهِ انْطِقِى. قَالَ فَتَنْطِقُ بِأَعْمَالِهِ قَالَ ثُمَّ يُخَلَّى بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْكَلاَمِ قَالَ فَيَقُوْلُ بُعْدًا لَكُنَّ وَسُحْقًا. فَعَنْكُنَّ كُنْتُ أُنَاضِلُ.


আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে ছিলাম, হঠাৎ তিনি হাসলেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি জান আমি কেন হাসছি? আমরা বললাম, আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, ক্বিয়ামতের দিন বান্দা যে তার রবের সাথে সরাসরি কথা বলবে, সেই কথাটি স্মরণ করে হাসছি। বান্দা বলবে, হে রব! তুমি কি আমাকে যুলম হতে নিরাপত্তা দান করনি? আল্লাহ বলবেন, হ্যাঁ, তখন বান্দা বলবে, আজ আমি আমার সম্পর্কে আপনজন ব্যতীত আমার বিরুদ্ধে অন্য কারও সাক্ষ্য গ্রহণ করব না। তখন আল্লাহ বলবেন, আজ তুমি নিজেই তোমার সাক্ষী হিসাবে এবং কিরামান-কাতেবীনের সাক্ষ্যই তোমার জন্য যথেষ্ট। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা তার মুখের উপর মোহর লাগিয়ে দিবেন এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বলা হবে, তোমরা কে কখন কি কি কাজ করেছো বল। তখন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহ তাদের কৃতকর্মসমূহ প্রকাশ করে দিবে। এরপর তার মুখকে স্বাভাবিক অবস্থায় খুলে দেওয়া হবে। তখন সে স্বীয় অঙ্গসমূহকে লক্ষ্য করে আক্ষেপের সাথে বলবে, হে দুর্ভাগা অঙ্গসমূহ! তোরা দূর হ! তোদের ধ্বংস হৌক! তোদের জন্যই তো আমি আমার রবের সাথে ঝগড়া করেছিলাম’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫৫৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩২০)।


ইসলামিক মোটিভেশনাল উক্তি 


عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ هَلْ تُضَارُّوْنَ فِىْ رُؤْيَةِ الشَّمْسِ فِى الظَّهِيْرَةِ لَيْسَتْ فِىْ سَحَابَةٍ. قَالُوْا لاَ. قَالَ فَهَلْ تُضَارُّوْنَ فِىْ رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَيْسَ فِىْ سَحَابَةٍ. قَالُوْا لاَ. قَالَ فَوَالَّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِهِ لاَ تُضَارُّوْنَ فِىْ رُؤْيَةِ رَبِّكُمْ إِلاَّ كَمَا تُضَارُّوْنَ فِىْ رُؤْيَةِ أَحَدِهِمَا قَالَ فَيَلْقَى الْعَبْدَ فَيَقُوْلُ أَىْ فُلْ أَلَمْ أُكْرِمْكَ وَأُسَوِّدْكَ وَأُزَوِّجْكَ وَأُسَخِّرْ لَكَ الْخَيْلَ وَالإِبِلَ وَأَذَرْكَ تَرْأَسُ وَتَرْبَعُ فَيَقُوْلُ بَلَى. قَالَ فَيَقُوْلُ أَفَظَنَنْتَ أَنَّكَ مُلاَقِىَّ فَيَقُوْلُ لاَ. فَيَقُوْلُ فَإِنِّىْ أَنْسَاكَ كَمَا نَسِيتَنِى. ثُمَّ يَلْقَى الثَّانِىَ فَيَقُوْلُ أَىْ فُلْ أَلَمْ أُكْرِمْكَ وَأُسَوِّدْكَ وَأُزَوِّجْكَ وَأُسَخِّرْ لَكَ الْخَيْلَ وَالإِبِلَ وَأَذَرْكَ تَرْأَسُ وَتَرْبَعُ فَيَقُولُ بَلَى أَىْ رَبِّ.

فَيَقُوْلُ أَفَظَنَنْتَ أَنَّكَ مُلاَقِىَّ فَيَقُوْلُ لاَ. فَيَقُوْلُ فَإِنِّى أَنْسَاكَ كَمَا نَسِيتَنِىْ. ثُمَّ يَلْقَى الثَّالِثَ فَيَقُوْلُ لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ آمَنْتُ بِكَ وَبِكِتَابِكَ وَبِرُسُلِكَ وَصَلَّيْتُ وَصُمْتُ وَتَصَدَّقْتُ. وَيُثْنِى بِخَيْرٍ مَا اسْتَطَاعَ فَيَقُولُ هَا هُنَا إِذًا قَالَ ثُمَّ يُقَالُ لَهُ الآنَ نَبْعَثُ شَاهِدَنَا عَلَيْكَ. وَيَتَفَكَّرُ فِىْ نَفْسِهِ مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْهَدُ عَلَىَّ فَيُخْتَمُ عَلَى فِيْهِ وَيُقَالُ لِفَخِذِهِ وَلَحْمِهِ وَعِظَامِهِ انْطِقِى فَتَنْطِقُ فَخِذُهُ وَلَحْمُهُ وَعِظَامُهُ بِعَمَلِهِ وَذَلِكَ لِيُعْذِرَ مِنْ نَفْسِهِ. وَذَلِكَ الْمُنَافِقُ وَذَلِكَ الَّذِىْ يَسْخَطُ اللهُ عَلَيْهِ.


আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! ক্বিয়ামতের দিন কি আমরা আমাদের রবকে দেখতে পাব? তিনি বললেন, দ্বিপ্রহরে মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে কি তোমাদের মধ্যে পরস্পরে বাধা সৃষ্টি হয়? তারা বললেন, না। তিনি আরও বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে পূর্ণিমার রাত্রে পূর্ণ চাঁদ দেখতে কি তোমাদের কোন প্রকারের অসুবিধা হয়? তারা বললেন, না। অতঃপর তিনি বললেন, সেই মহান সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! এই দু’টির কোন একটিকে দেখতে তোমাদের যেই পরিমাণ অসুবিধা হয়, সেই দিন তোমাদের রবকে দেখতে সেই পরিমাণ অসুবিধাও হবে না। এরপর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তখন আল্লাহ তা’আলা কোন এক বান্দাকে লক্ষ্য করে বলবেন, হে অমুক! আমি কি তোমাকে মর্যাদা দান করিনি? আমি কি তোমাকে সর্দারী দান করিনি? আমি কি তোমাকে বিবি দান করিনি? আমি কি তোমার জন্য ঘোড়া ও উটকে অনুগত করে দেয়নি? আমি কি তোমাকে এই সুযোগ দেয়নি যে, তুমি নিজ সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দিবে এবং তাদের নিকট হতে এক-চতুর্থাংশ মাল ভোগ করবে? জবাবে বান্দা বলবে, হ্যাঁ, (হে আমার প্রতিপালক!)। অতঃপর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ তা’আলা বান্দাকে বললেন, আচ্ছা বল দেখি, তোমার কি এই ধারণা ছিল যে, তুমি আমার সাক্ষাৎ লাভ করবে? বান্দা বলবে, না। এইবার আল্লাহ বলবেন, (দুনিয়াতে) তুমি যেভাবে আমাকে ভুলে গিয়েছিলে আজ আমিও (আখেরাতে) অনুরূপভাবে তোমাকে ভুলে থাকব। (অর্থাৎ তোমাকে আযাবে লিপ্ত রাখব)। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা দ্বিতীয় এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করবেন, সেও অনুরূপ বলবে। তারপর তৃতীয় এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করবেন এবং তাকেও অনুরূপ কথা জিজ্ঞেস করলে সে বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমার প্রতি, তোমার কিতাবের প্রতি এবং তোমার সমস্ত নবীগণের প্রতি ঈমান এনেছি, ছালাত আদায় করেছি, ছিয়াম পালন করেছি এবং দান-ছাদাক্বা করেছি। মোটকথা, সে সাধ্য পরিমাণ নিজের নেক কার্যসমূহের একটি তালিকা আল্লাহর সম্মুখে তুলে ধরব। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, আচ্ছা! তুমি তো তোমার কথা বললে, এখন এখানেই দাঁড়াও, এক্ষুণি তোমার ব্যাপারে সাক্ষী উপস্থিত করছি। এই কথা শুনে বান্দা মনে মনে চিন্তা করবে, এমন কে আছে যে, এখানে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে?

অতঃপর তার মুখে মোহর লাগিয়ে দেওয়া হবে এবং তার রানকে বলা হবে, তুমি বল, তখন তার রান, হাড়, মাংস প্রভৃতি এক একটি করে বলে ফেলবে, এরা যা যা করেছিল। তার মুখে মোহর লাগিয়ে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হতে এই জন্য সাক্ষী গ্রহণ করা হবে, যেন সেই বান্দা কোন ওযর-আপত্তি পেশ করতে না পারে। বস্তুতঃ যেই বান্দার কথা আলোচনা করা হয়েছে, সে হ’ল মুনাফিক এবং এই কারণেই আল্লাহ তার প্রতি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হবেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫৫৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩২১)।




عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِنَّ اللهَ سَيُخَلِّصُ رَجُلاً مِّنْ أُمَّتِىْ عَلَى رُءُوْسِ الْخَلاَئِقِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَنْشُرُ عَلَيْهِ تِسْعَةً وَّتِسْعِيْنَ سِجِلاًّ كُلُّ سِجِلٍّ مِثْلُ مَدِّ الْبَصَرِ ثُمَّ يَقُوْلُ أَتُنْكِرُ مِنْ هَذَا شَيْئًا أَظَلَمَكَ كَتَبَتِى الْحَافِظُوْنَ فَيَقُوْلُ لاَ يَا رَبِّ فَيَقُوْلُ أَفَلَكَ عُذْرٌ فَيَقُوْلُ لاَ يَا رَبِّ فَيَقُوْلُ بَلَى إِنَّ لَكَ عِنْدَنَا حَسَنَةً فَإِنَّهُ لاَ ظُلْمَ عَلَيْكَ الْيَوْمَ فَتُخْرَجُ بِطَاقَةٌ فِيْهَا أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ فَيَقُوْلُ احْضُرْ وَزْنَكَ فَيَقُوْلُ يَا رَبِّ مَا هَذِهِ الْبِطَاقَةُ مَعَ هَذِهِ السِّجِلاَّتِ فَقَالَ إِنَّكَ لاَ تُظْلَمُ قَالَ فَتُوْضَعُ السِّجِلاَّتُ فِىْ كِفَّةٍ وَالْبِطَاقَةُ فِىْ كِفَّةٍ فَطَاشَتِ السِّجِلاَّتُ وَثَقُلَتِ الْبِطَاقَةُ فَلاَ يَثْقُلُ مَعَ اسْمِ اللهِ شَىْءٌ-


আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন এমন এক ব্যক্তিকে জনসম্মুখে উপস্থিত করা হবে, যার আমলনামা খোলা হবে নিরানব্বই ভলিয়মে এবং প্রতি ভলিয়ম বিস্তীর্ণ হবে দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা তাকে জিজ্ঞেস করবেন, আচ্ছা বল দেখি, তুমি এর কোন একটিকে অস্বীকার করতে পারবে? অথবা আমার লিখক ফেরেশতাগণ কি তোমার প্রতি যুলুম করেছে? সে বলবে, না। হে আমার রব্ব! আল্লাহ তা’আলা জিজ্ঞেস করবেন, তবে কি তোমার পক্ষ হতে কোন ওযর পেশ করার আছে? সে বলবে, না; হে আমার রব! তখন আল্লাহ বলবেন, হ্যাঁ, তোমার একটি নেকী আমার নিকট রক্ষিত আছে। তুমি নিশ্চিত জেনে রাখ, আজ তোমার প্রতি কোন যুলুম বা অবিচার করা হবে না। এরপর এক টুকরা কাগজ বের করা হবে, যাতে লিখা আছে, أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ [অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ, (মা‘বূদ) নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রাসূল]। অতঃপর আল্লাহ তাকে বলবেন, তোমার আমলের ওযন দেখার জন্য উপস্থিত হও। তখন সে বলবে, হে আমার রব! ঐ সমস্ত বিরাট বিরাট দফতরের মুকাবিলায় এই এক টুকরা কাগজের মূল্যই বা কি আছে? তখন আল্লাহ বলবেন, তোমার উপর কোন অবিচার করা হবে না। নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, অতঃপর ঐ সমস্ত দফতরগুলি এক পাল্লায় এবং এই কাগজের টুকরাখানি আরেক পাল্লায় থাকবে। কাগজের টুকরা যে পাল্লায় থাকবে তা ভারী হয়ে নীচের দিকে ঝুঁকে থাকবে। মোটকথা, আল্লাহর নামের সাথে অন্য কোন জিনিস ওযনই হতে পারবে না’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৫৫৫৯; বাংলা মিশকাত হা/৫৩২৪)।




عَنْ عَدِىِّ بْنِ حَاتِمٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَا مِنْكُمْ أَحَدٌ إِلاَّ سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ، لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ تَرْجُمَانٌ، فَيَنْظُرُ أَيْمَنَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إِلاَّ مَا قَدَّمَ مِنْ عَمَلِهِ، وَيَنْظُرُ أَشْأَمَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إِلاَّ مَا قَدَّمَ، وَيَنْظُرُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَلاَ يَرَى إِلاَّ النَّارَ تِلْقَاءَ وَجْهِهِ، فَاتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ.


আদী ইবনে হাতেম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যার সাথে তার রব কথাবার্তা বলবেন না। তার ও তার রবের মধ্যে কোন দোভাষী এবং এমন কোন পর্দা থাকবে না, যা তাকে আড়াল করে রাখবে। সে তার ডানে তাকাবে, তখনও পূর্বে প্রেরিত আমল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। আবার বামে তাকাবে, তখনও পূর্ব প্রেরিত আমল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। আর সম্মুখের দিকে তাকালে জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। যা একেবারে চেহারার সম্মুখে অবস্থিত। সুতরাং খেজুর ছালের বিনিময়ে হলেও জাহান্নাম হতে বাঁচতে চেষ্টা কর’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৫৫৫০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩১৬)।



عَنْ أَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم وَالَّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِهِ لاَ تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى تُكَلِّمَ السِّبَاعُ الإِنْسَ وَحَتَّى تُكَلِّمَ الرَّجُلَ عَذَبَةُ سَوْطِهِ وَشِرَاكُ نَعْلِهِ وَتُخْبِرَهُ فَخِذُهُ بِمَا أَحْدَثَ أَهْلُهُ مِنْ بَعْدِهِ.


আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, সেই মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! সেই সময় পর্যন্ত ক্বিয়ামত কায়েম হবে না যে পর্যন্ত না হিংস্র পশু মানুষের সাথে কথা বলবে এবং যে পর্যন্ত না কারও চাবুক তার সাথে কথা বলবে, তার জুতার ফিতা তার সাথে কথা বলবে। আর তার উরু তাকে জানিয়ে দিবে যে, তার অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী কি করেছে’ (তিরমিযী, বাংলা মিশকাত হা/৫২২৫)।




عَنْ بَهز بْنِ حَكِيْمٍ، عَنْ أَبِيْهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ: إِنَّكُمْ تُدْعَوْن مُفَدَّمة أَفْوَاهُكُمْ بالفِدَام، فَأَوَّلُ مَا يُسْأَلُ عَنْ أَحَدِكُمْ فَخِذُهُ وَكَتِفُهُ.


বাহয ইবনু হাকিম তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ


বাহয ইবনু হাকিম তার পিতার মধ্যস্থতায় বর্ণনা করেন, তার দাদা বলেন, নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদেরকে মুখ বন্ধ করে ডাকা হবে। সেদিন তোমাদের মুখ বন্ধ থাকবে। সর্বপ্রথম তোমাদের উরু এবং কাধকে জিজ্ঞেস করা হবে’ (নাসাঈ, ইবনু কাছীর হা/৫৬৬৯)।



عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُوْلُ إِنَّ أَوَّلَ عَظْمٍ مِنَ الْإِنْسَانِ يَتَكَلَّمُ يَوْمَ يُختَم عَلَى الْأَفْوَاهِ، فَخذُه مِنَ الرِّجل الْيُسْرَى.


উকবা ইবনু আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন মানুষের যখন মুখ বন্ধ থাকবে, তখন তার বাম উরুর হাড় সর্বপ্রথম কথা বলবে’ (ইবনু কাছীর ৫৬৭১)।


আত্মসাৎ নিয়ে হাদিস ও উপদেশ


عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ إِنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ لاَ يَزْنِىْ الزَّانِىْ حِيْنَ يَزْنِىْ وَهْوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِيْنَ يَشْرَبُهَا وَهْوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَسْرِقُ السَّارِقُ حِيْنَ يَسْرِقُ وَهْوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً ذَاتَ شَرَفٍ يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ فِيْهَا أَبْصَارَهُمْ حِيْْنَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَغُلُّ أَحَدُكُمْ حِيْنَ يَغُلُّ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَإِيَّاكُمْ إِيَّاكُمْ.


আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়সাল্লাম) এরশাদ করেন, (১) কোন যেনাকার যেনা করতে পারে না যখন সে যেনা করে, মুমিন থাকা অবস্থায়। (২) কোন মদখোর মদপান করতে পারে না যখন সে মদ্যপান করে, মুমিন থাকা অবস্থায়। (৩) কোন চোর চুরি করতে পারে না যখন সে চুরি করে, মুমিন থাকা অবস্থায়। (৪) কোন ডাকাত এরূপে ডাকাতি বা ছিনতাই করতে পারে না যে লোক তার প্রতি নযর উঠিয়ে দেখে (অর্থাৎ প্রকাশ্যে) যখন সে ডাকাতি করে, মুমিন থাকা অবস্থায়। (৫) তোমাদের কেউ গণীমতের মালে (বা কোন মালে) খেয়ানত করতে পারে না যখন সে খেয়ানত করে, মুমিন থাকা অবস্থায়। অতএব তোমরা সাবধান হও? তোমরা সাবধান হও’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৩)। অত্র হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, মানুষ যখন খিয়ানত করে তখন মুমিন থাকে না। মুমিন হওয়ার জন্য তওবা করতে হবে।


عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلَاثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ وَإِذَا اُؤْتُمِنَ خَانَ-


আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘মুনাফিকের আলামত হচ্ছে তিনটা- যখন সে কথা বলে, মিথ্যা বলে, যখন ওয়াদা করে, ভঙ্গ করে এবং যখন তার নিকট কোন কিছু আমানত রাখা হয়, তা সে খিয়ানত করে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫)।



عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَلَّمَا خَطَبَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِلاَّ قَالَ لاَ إِيْمَانَ لِمَنْ لاَ أَمَانَةَ لَهُ وَلاَ دِيْنَ لِمَنْ لاَ عَهْدَ لَهُ.


আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে এরূপ উপদেশ খুব কমই দিয়েছেন, যাতে একথাগুলি বলেননি যে, ‘যার আমানতদারী নেই তার ঈমান নেই এবং যার অঙ্গীকারের মূল্য নেই তার দ্বীন-ধর্ম নেই’ (আহমাদ হা/১১৯৩৫, মিশকাত হা/৩৫, বাংলা মিশকাত হা/৩১)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আমানত রক্ষা করা এবং অঙ্গীকার পূরণ করা পূর্ণ মুমিন হওয়ার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।



عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم أَدِّ الْأَمَانَةَ إِلَى مَنْ ائْتَمَنَكَ وَلاَ تَخُنْ مَنْ خَانَكَ.


আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তোমার কাছে আমানত রেখেছে তাকে সময় মত আমানত বুঝিয়ে দাও। আর যে তোমার সাথে খিয়ানত করে তার খিয়ানত করো না‘ (তিরমিযী, আবুদাঊদ, দারেমী, মিশকাত হা/২৯৩৪)।



عَنْ سَعِيدِ بْنِ زَيْدِ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَنْ أَخَذَ شِبْرًا مِنْ الأَرْضِ ظُلْمًا فَإِنَّهُ يُطَوَّقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ سَبْعِ أَرَضِيْنَ.


সাঈদ ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অত্যাচার করে অর্ধহাত যমীন দখল করেছে, নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন অনুরূপ সাতটি যমীন তার কাঁধে ঝুলিয়ে দেয়া হবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৯৩৮)।



عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَنْ أَخَذَ مِنَ الْأَرْضِ شَيْئًا بِغَيْرِ حَقِّهِ خُسِفَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَى سَبْعِ أَرْضِيْنَ.


তাবেঈ সালেম তাঁর বাপ আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর হতে থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যে অনধিকারে কারো কিছু যমীন নিয়েছে, ক্বিয়ামতের দিন তাকে সাত তবক যমীন পর্যন্ত ধসিয়ে দেওয়া হবে’ (বুখারী, মিশকাত হা/২৯৫৮)।



عَنْ يَعْلَى بْنِ مُرَّةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُولُ: أَيُّمَا رَجُلٍ ظَلَمَ شِبْرًا مِنَ الْأَرْضِ كَلَّفَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ يَحْفِرَهُ حَتَّى يَبْلُغَ آخِرَ سَبْعِ أَرَضِيْنَ ثُمَّ يُطَوَّقَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ النَّاس.


ইয়া’লা ইবনু মুররা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, ‘যেকোন ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারো এক বিগত জমি দখল করে তাকে আল্লাহ তা সাত তবকের শেষ পর্যন্ত খুঁড়তে বাধ্য করবেন। অতঃপর তার গলায় তা শিকলরূপে পরিয়ে দেওয়া হবে, যাবৎ না মানুষের বিচার শেষ করা হয়’ (আহমাদ, মিশকাত হা/২৯৬০)।



عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قِيلَ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم أَىُّ النَّاسِ أَفْضَلُ قَالَ كُلُّ مَخْمُوْمِ الْقَلْبِ صَدُوْقِ اللِّسَانِ. قَالُوْا صَدُوْقُ اللِّسَانِ نَعْرِفُهُ فَمَا مَخْمُوْمُ الْقَلْبِ قَالَ هُوَ التَّقِىُّ النَّقِىُّ لاَ إِثْمَ فِيهِ وَلاَ بَغْىَ وَلاَ غِلَّ وَلاَ حَسَدَ.


আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হল, মানুষের মধ্যে উত্তম কে? তিনি বললেন, ‘প্রত্যেক নিষ্কলুষ অন্তঃকরণ সত্যভাষী’। সাহাবাগণ আরয করলেন, ‘সুদূকুল লিসান’ তো আমরা বুঝি, তবে ‘মাখ্মূমুল কালব’ কি? তিনি বললেন, ‘নির্মল ও পবিত্র অন্তঃকরণ, যা পাপ করেনি, যুলুম করেনি, যা খিয়ানত করেনি ও যা হিংসা-বিদ্বেষ হতে মুক্ত’ (ইবনু মাজাহ, বায়হাক্বী শু’আবুল ঈমান, মিশকাত হা/৫২২১)।



عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ أَرْبَعٌ إِذَا كُنَّ فِيْكَ فَلاَ عَلَيْكَ مَا فَاتَكَ مِنَ الدُّنْيَا حِفْظُ أَمَانَةٍ وَصِدْقُ حَدِيْثٍ وَحُسْنُ خَلِيْقَةٍ وَعِفَّةٌ فِىْ طُعْمَةٍ.


আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যখন তোমার মধ্যে চারটি বস্তু বিদ্যমান থাকে, তখন দুনিয়ার যা কিছুই তোমার থেকে চলে যায় তাতে তোমার কোন ক্ষতি নেই। আমানত রক্ষা করা, সত্য কথা বলা, উত্তম চরিত্র হওয়া এবং খানা-পিনাতে সতর্কতা অবলম্বন করা’ (আহমাদ, শু’আবুল ঈমান, মিশকাত হা/৫২২২)।



عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْروٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِذَا أَصَابَ غَنِيْمَةً أَمَرَ بِلَالًا فَنَادَى فِي النَّاسِ فَيَجِيْئُوْنَ بِغَنَائِمِهِمْ فَيُخَمِّسُهُ وَيُقَسِّمُهُ فَجَاءَ رَجُلٌ يَوْمًا بَعْدَ ذَلِكَ بِزِمَامٍ مِنْ شَعَرٍ فَقَالَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذَا فِيْمَا كُنَّا أَصَبْنَاهُ مِنَ الْغَنِيْمَةِ قَالَ: أَسْمَعْتَ بِلَالًا نَادَى ثَلَاثًا؟ قَالَ: نَعَمْ قَالَ: فَمَا مَنَعَكَ أَنْ تَجِيءَ بِهِ؟ فَاعْتَذَرَ قَالَ: كُنْ أَنْتَ تَجِيءُ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَلَنْ أَقْبَلَهُ عَنْكَ.


আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


যখনই গনীমতের মাল লাভ করতেন, তখন বেলাল (রাঃ)-কে আদেশ করতেন। (তিনি যেন লোকদের যার কাছে যাকিছু আছে তা উপস্থিত করার জন্য ঘোষণা করেন)। তিনি জনগণের মধ্যে ঘোষণা করতেন, তখন লোকেরা তাদের স্ব স্ব গনীমত নিয়ে আসত। অতঃপর সমস্ত মাল হতে (বায়তুল মালের) এক-পঞ্চমাংশ বের করতেন এবং অবশিষ্টগুলি লোকদের মধ্যে বণ্টন করে দিতেন। একদা এক ব্যক্তি এর (খুমুস বের করা এবং সমস্ত মাল বিতরণ করে দেওয়ার) পর একখানা পশমের লাগাম নিয়ে আসল এবং বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! ইহা গনীমতের মাল, যা আমি পেয়েছিলাম। তার কথা শুনে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, বেলাল যে তিন তিনবার ঘোষণা করেছিল, তুমি কি তা শুনেছ? সে বলল, হ্যাঁ, (শুনেছি)। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সেই সময় তা আনতে তোমাকে কে বাধা দিয়েছিল? তখন সে বিভিন্ন ওযর পেশ করল। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও, তুমি ক্বিয়ামতের দিন এই রশি নিয়েই উপস্থিত হবে। আমি তোমার নিকট হতে এটা গ্রহণ করব না’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪০১২)।



عَنْ خَوْلَةَ بِنْتِ قَيْسٍ قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُوْلُ إِنَّ هَذِهِ الْمَالَ خَضِرَةٌ حُلْوَةٌ فَمَنْ أَصَابَهُ بِحَقِّهِ بُوْرِكَ لَهُ فِيْهِ وَرُبَّ مُتَخَوِّضٍ فَمَا شَاءَتْ بِهِ نَفْسُهُ مِنْ مَالِ اللهِ وَرَسُوْلِهِ لَيْسَ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَّا النَّارُ.


খাওলাহ বিনতে কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই এই পার্থিব সম্পদ শ্যামল ও সুমিষ্ট (অর্থাৎ আকর্ষণীয়) তবে যেই ব্যক্তি ন্যায়ভাবে প্রাপ্ত হয় তাতে তার বরকত হয়। আবার বহু লোক এমনও আছে, যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সম্পদে (অর্থাৎ গনীমতের মালে) যথেচ্ছা তসরূপ করে, তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামের আগুন ব্যতীত আর কিছুই না’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৪০১৭)।


বানী হাদিস মূলক গল্প



عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَامَ فِيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم ذَاتَ يَوْمٍ فَذَكَرَ الْغُلُوْلَ فَعَظَّمَهُ وَعَظَّمَ أَمْرَهُ ثُمَّ قَالَ لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ بَعِيْرٌ لَهُ رُغَاءٌ يَقُوْلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَغِثْنِى. فَأَقُوْلُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ. لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ فَرَسٌ لَهُ حَمْحَمَةٌ فَيَقُوْلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَغِثْنِى. فَأَقُوْلُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ. لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ شَاةٌ لَهَا ثُغَاءٌ يَقُوْلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَغِثْنِى. فَأَقُوْلُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ. لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ نَفْسٌ لَهَا صِيَاحٌ فَيَقُوْلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَغِثْنِى. فَأَقُوْلُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ. لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ رِقَاعٌ تَخْفِقُ فَيَقُوْلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَغِثْنِى. فَأَقُوْلُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ. لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ يَجِىءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رَقَبَتِهِ صَامِتٌ فَيَقُوْلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَغِثْنِى فَأَقُوْلُ لاَ أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ أَبْلَغْتُكَ.


আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের মাঝে বক্তব্য দেয়ার জন্য দাঁড়ালেন, তিনি খিয়ানত সম্পর্ককে বক্তব্য দিলেন এবং খিয়ানতের বিষয়টি খুব বড় করে পেশ করলেন। তারপর তিনি বললেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন তোমাদের কাউকে আমি এমন অবস্থায় পাব যে, তার কাঁধের উপর উট চিৎকার করতে থাকবে। সে বলবে, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে রক্ষা করুন। আমি বলব, আজ আল্লাহর সামনে তোমার জন্য সামান্য কিছু করার ক্ষমতা আমি রাখি না, যা পূর্বেই বলেছি। ক্বিয়ামতের দিন আমি তোমাদের কাউকে এমন অবস্থায় পাব যে, তার কাঁধের উপর ঘোড়া চিৎকার করতে থাকবে। সে বলবে, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে রক্ষা করুন, আমি বলব, আজ আল্লাহর সামনে তোমার জন্য সামান্য কিছু করার ক্ষমতা আমার নেই, যা আমি পূর্বেই বলেছি। ক্বিয়ামতের দিন আমি যেন তোমাদের কাউকে এই অবস্থায় দেখতে না পাই যে, সে কাঁধের উপর একটি ছাগল বহন করছে এবং আমাকে বলবে, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে সাহায্য করুন। আর আমি বলব, আমি কিছুই করতে পারব না।

আমিতো তোমাকে আল্লাহর বিধান পূর্বেই জানিয়ে দিয়েছি। কিয়ামতের দিন আমি যেন তোমাদের কাউকে এমন অবস্থায় দেখতে না পাই যে, সে নিজের কাঁধের উপর চিৎকার রত একটি মানুষ বহন করে নিয়ে আসবে আর আমাকে বলবে, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে সাহায্য করুন। আর আমি বলব, আজ আমি তোমার জন্য কিছুই করতে পারব না। আমি আল্লাহর বিধান তোমাকে পূর্বেই জানিয়ে দিয়েছি। ক্বিয়ামতের দিন আমি যেন তোমাদের কাউকে এ অবস্থায় দেখতে না পাই যে, সে নিজের কাঁধের উপর কাপড় ইত্যাদির এক খণ্ড বহন করে নিয়ে আসছে। আর তা ভীষণভাবে তার কাঁধের উপর দুলছে, তখন সে আমাকে বলবে, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে সাহায্য করুন, আর আমি বলব, আমি তোমার জন্য কিছুই করতে পারব না। কিয়ামতে আমি যেন তোমাদের কাউকে এমন অবস্থায় না দেখতে পাই যে, সে নিজের কাঁধের উপর অচেতন সম্পদ (সোনা-চাঁদি) বহন করে নিয়ে আসছে। আর আমাকে বলবে, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে সাহায্য করুন। আর আমি বলব, আজ আমি তোমাকে কোন সাহায্য করতে পারব না। আমি তো তোমাকে আল্লাহর বিধান পূর্বেই জানিয়ে দিয়েছি’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৯৯৬)।


عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ أَهْدَى رَجُلٌ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم غُلاَمًا يُقَالُ لَهُ مِدْعَمَ فَبَيْنَمَا مِدْعَمٌ يَحُطُّ رَحْلاً لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِذْ أَصَابَهُ سَهْمٌ عَائِرٌ فَقَتَلَهُ فَقَالَ النَّاسُ هَنِيئًا لَهُ الْجَنَّةُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم كَلاَّ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّ الشَّمْلَةَ الَّتِي أَخَذَهَا يَوْمَ خَيْبَرَ مِنْ الْمَغَانِمِ لَمْ تُصِبْهَا الْمَقَاسِمُ لَتَشْتَعِلُ عَلَيْهِ نَارًا فَلَمَّا سَمِعَ ذَلِكَ النَّاسُ جَاءَ رَجُلٌ بِشِرَاكٍ أَوْ شِرَاكَيْنِ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَقَالَ شِرَاكٌ مِنْ نَارٍ أَوْ شِرَاكَانِ مِنْ نَارٍ.


আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


মিদআম নামে একটি গোলাম রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে হাদিয়া দিয়েছিল। মিদআম এক সময় রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উটের পিঠের হাওদা নামাচ্ছিল এমতাবস্থায় একটি তীর এসে তাকে লাগে এবং সে মারা যায়। ছাহাবীগণ বলেন, তার জন্য জান্নাত। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কখনই নয়। আল্লাহর কসম, নিশ্চয়ই ঐ চাদরটি যেটি সে খায়বারের গনীমত বণ্টন করার পূর্বে আত্মসাৎ করেছিল সে চাদরটি জাহান্নামের আগুন তার উপর উত্তেজিত করছে। এ কথা শুনে একজন লোক একটি জুতার ফিতা বা দু’টি জুতার ফিতা রসূলের নিকট নিয়ে আসল। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, একটি বা দু’টি জুতার ফিতা আত্মসাৎ করলেও জাহান্নামে যাবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৯৯৭; বাংলা ৮ম খণ্ড, হা ৩৮২১)। অত্র হাদীছসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আত্মসাৎকৃত বস্তু ক্ষুদ্র হলেও তার পরিণাম জাহান্নাম।


عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ كَانَ عَلَى ثَقَلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ كَرْكَرَةُ فَمَاتَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم هُوَ فِي النَّارِ فَذَهَبُوا يَنْظُرُونَ إِلَيْهِ فَوَجَدُوا عَبَاءَةً قَدْ غَلَّهَا.


আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর গনীমতের মালের এক ব্যক্তি দায়িত্বশীল ছিল, যে কারকারা নামে পরিচিত। সে মারা গেলে রাসূল (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে জাহান্নামী বলে ঘোষণা করেন। ছাহাবীগণ তার নিকট গিয়ে দেখলেন সে একটি চাদর আত্মসাৎ করেছিল (ইবনু মাজাহ, হা/২৮৪১, হাদীছ ছহীহ, বুখারী, মিশকাত হা/৩৯৯৮; বাংলা ৮ম খণ্ড, হা/৩৮২২)।



عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ قَالَ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ خَيْبَرَ أَقْبَلَ نَفَرٌ مِنْ صَحَابَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَقَالُوا فُلاَنٌ شَهِيدٌ فُلاَنٌ شَهِيدٌ حَتَّى مَرُّوا عَلَى رَجُلٍ فَقَالُوا فُلاَنٌ شَهِيدٌ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم كَلاَّ إِنِّي رَأَيْتُهُ فِي النَّارِ فِي بُرْدَةٍ غَلَّهَا.


ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


ওমর (রাঃ) আমাকে বললেন, ‘খায়বারের যুদ্ধের দিন ছাহাবীগণের একটি দল বাড়ী ফিরে আসছিলেন। ঐ সময় ছাহাবীগণ বললেন, অমুক অমুক শহীদ, শেষ পর্যন্ত এমন এক ব্যক্তিকে ছাহাবীগণ শহীদ বললেন, যার ব্যাপারে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কখনো নয়, আমি তাকে জাহান্নামে দেখছি সে একটি চাদর আত্মসাৎ করেছে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪০৩৪; বাংলা ৮ম খণ্ড, হা/৩৮৫৭)।



عَنْ خَوْلَةَ الأَنْصَارِيَّةِ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُوْلُ إِنَّ رِجَالاً يَتَخَوَّضُوْنَ فِيْ مَالِ اللهِ بِغَيْرِ حَقٍّ فَلَهُمْ النَّارُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.


খাওলা আনছারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, ‘নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে সম্পদ দখল করবে। ক্বিয়ামতের দিন তার জন্য জাহান্নাম রয়েছে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৩৯৯৫; বাংলা মিশকাত ৮ম খণ্ড, হা/৩৮১৯ ‘জিহাদ’ অধ্যায়)।



عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لاَ يَقْبَلُ إِلاَّ طَيِّبًا وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِيْنَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِيْنَ ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيْلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ.


আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ছাড়া গ্রহণ করেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ রাসূলগণকে যা আদেশ করেছেন মুমিনদেরও তাই আদেশ করেছেন। তারপর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি লোকের আলোচনা করলেন, যে ব্যক্তি সফরে থাকায় ধুলায় মলিন হয়। আকাশের দিকে দু’হাত উত্তোলন করে প্রার্থনা করছে, হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রতিপালক! কিন্তু তার খাদ্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পোষাক হারাম, তার জীবিকা নির্বাহ হারাম, কিভাবে তার দো’আ কবুল হবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬০, বাংলা মিশকাত ৬ষ্ঠ খণ্ড, হা/২৬৪০, ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়)। অত্র হাদীছে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে খাদ্য পানি পোষাক হারাম থাকলে ইবাদত কবুল হবে না।



عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَأْتِيْ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ لاَ يُبَالِي الْمَرْءُ مَا أَخَذَ مِنْهُ أَمِنَ الْحَلاَلِ أَمْ مِنْ الْحَرَامِ.


আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘মানুষের উপর এমন একটি সময় আসবে, যখন মানুষ হালাল-হারাম উপার্জনে বিবেচনা করবে না’ (বুখারী, মিশকাত হা/২৭৬১)।



عَنْ كَعَبِ بْنِ عُجْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِّيَ بِالْحَرَامِ.


কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘হারাম খাদ্য দ্বারা পরিপুষ্ট শরীর জান্নাতে যাবে না’ (মিশকাত/২৭৮৭ ; বাংলা ৬ষ্ঠ খণ্ড, হাঃ/২৬৬৭)।



عَنْ النُّعْمَانِ بْنَ بَشِيْرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم الْحَلاَلُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَعْلَمُهُنَّ كَثِيرٌ مِنْ النَّاسِ فَمَنْ اتَّقَى الْشُبْهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِدِيْنِهِ وَعِرْضِهِ وَمَنْ وَقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وَقَعَ فِي الْحَرَامِ كَالرَاعِيْ يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَهُ أَلاَ وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى أَلاَ وَإِنَّ حِمَى اللهِ مَحَارِمُهُ أَلاَ وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ أَلاَ وَهِيَ الْقَلْبُ.


নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘হালালও স্পষ্ট হারামও স্পষ্ট। উভয়ের মধ্যে কিছু অস্পষ্ট রয়েছে, যা অনেক মানুষ জানে না। যে ব্যক্তি অস্পষ্ট থেকে বেঁচে থাকবে সে তার দ্বীন ও তার মর্যাদাকে পূর্ণ করে নিবে। আর যে ব্যক্তি অস্পষ্ট গ্রহণ করবে সে হারামকে গ্রহণ করবে। যেমন একটি রাখাল ক্ষেতের সীমানায় ছাগল চরালে শস্য খেতে যেতে পারে। মনে রেখো, প্রত্যেক বাদশার একটি সীমা রয়েছে আর আল্লাহর সীমানা হচ্ছে তাঁর হারাম। নিশ্চয়ই শরীরে একটি টুকরা আছে, টুকরাটি ঠিক থাকলে সম্পূর্ণ শরীর ঠিক থাকবে, টুকরাটি নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ শরীর নষ্ট হয়ে যাবে। আর তা হচ্ছে অন্তর’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬২)।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url