গর্ভাবস্থায় ঘুমের সঠিক নিয়ম | কোন পাশে শোয়া নিরাপদ? | Pregnancy Sleep Tips in Bangla

গর্ভাবস্থায় ঘুমের সঠিক নিয়ম | কোন পাশে শোয়া নিরাপদ? | Pregnancy Sleep Tips in Bangla


গর্ভাবস্থায় ঘুমের সমস্যা প্রায় প্রতিটি মায়েরই অভিজ্ঞতা। অনেকেই রাতে ঘুম ভেঙে দেখেন চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন, কেউ আবার জিজ্ঞেস করেন — এতে কি বাচ্চার ক্ষতি হয়? ঘুম কতক্ষণ হওয়া উচিত? দুপুরে ঘুম না এলে কী করবেন? আজকের এই পোস্টে গর্ভাবস্থায় ঘুম সম্পর্কিত সব প্রশ্নের উত্তর একসাথে জানবেন।


😴 গর্ভাবস্থায় ঘুম কত ঘণ্টা হওয়া উচিত?

একটি সুস্থ প্রেগনেন্সিতে দিনে কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুম খুবই জরুরি।
👉 এর মধ্যে ১ থেকে ১.৫ ঘণ্টা দুপুরে বিশ্রাম নিন বা হালকা ঘুম দিন।
👉 যাদের দুপুরে ঘুমানোর অভ্যাস নেই, তারা শুয়ে বিশ্রাম নিতে পারেন, গান শুনতে পারেন বা বই পড়তে পারেন।

📵 তবে মোবাইল স্ক্রল করবেন না! গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার ভ্রূণের মস্তিষ্কের বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং জন্মের পর শিশুর আচরণেও সমস্যা দেখা দিতে পারে।


🛏️ গর্ভাবস্থায় কোন পাশে শোয়া সবচেয়ে নিরাপদ?

🔹 বাম পাশ ফিরে শোয়া — সবচেয়ে ভালো

ডাক্তাররা সাধারণত বাম পাশ ফিরে শোয়ার পরামর্শ দেন।
এর কারণ:

  • এতে রক্ত চলাচল ভালো হয়,

  • ভ্রূণের অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ বাড়ে,

  • মায়ের শরীরে ফুলাভাব (swelling) কমে যায়।

🔹 ডান পাশ ফিরে শোয়া

বাম পাশে শুয়ে ক্লান্ত লাগলে মাঝে মাঝে ডান পাশে শোতে পারেন
পেটের নিচে একটা বালিশ রাখলে জরায়ুর চাপ কমে যাবে।

🔹 চিৎ হয়ে শোয়া (Flat Position)

প্রথম ৪ মাস পর্যন্ত চিৎ হয়ে শোয়া যায়। কিন্তু ৫ মাসের পর থেকে এটি এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে—

  • রক্তচাপ বেড়ে যায়,

  • শ্বাসকষ্ট,

  • পা ফুলে যাওয়া,

  • কোমর ব্যথা বা এসিডিটির সমস্যা হয়।

💡 তবে যদি রাতে ঘুম থেকে উঠে দেখেন চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন — ভয় পাবেন না। এটি স্বাভাবিক। শুধু পিঠ ও পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে নিন, এতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।



গর্ভকাল শোয়ার ভঙ্গি নির্দেশনা
১ম থেকে ৪র্থ মাস যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্য লাগে চিৎ হয়ে বা পাশে শুতে পারেন
৫ম থেকে ৭ম মাস বাম পাশ ফিরে চিৎ হয়ে শোয়া কমিয়ে দিন
৮ম থেকে ৯ম মাস বাম পাশ + দুই হাঁটুর মাঝে বালিশ সবচেয়ে আরামদায়ক ও নিরাপদ

🌙 ভালো ঘুমের জন্য ৬টি কার্যকর টিপস

  1. সন্ধ্যার পর পানি পান ধীরে ধীরে কমিয়ে দিন।

  2. রাত ৮টার মধ্যে রাতের খাবার শেষ করুন এবং ১০টার মধ্যে ঘুমাতে যান।

  3. ঘুমানোর আগে ব্লাডার ফাঁকা করে নিন।

  4. ঘর সম্পূর্ণ অন্ধকার ও শান্ত রাখুন।

  5. ডাক্তার নির্দেশিত ঘুম সহায়ক ওষুধ (যেমন Doxylin) ঠিক সময়মতো গ্রহণ করুন।

  6. হালকা তুলার আরামদায়ক পোশাক পরুন।


🚫 ঘুমের আগে যা কখনোই করবেন না

  • বিকেলের পর চা, কফি, চকলেট বা ঝাল খাবার খাবেন না।

  • মোবাইল, টিভি বা গেমে দীর্ঘ সময় ব্যয় করবেন না।

  • ভারী খাবার বা ভাজাপোড়া খাবার খাবেন না।

  • শক্তপোক্ত বা টাইট পোশাক পরবেন না।


গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ঘুম মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাম পাশ ফিরে শোয়া সবচেয়ে নিরাপদ, এবং রাতে ঘুমের মধ্যে চিৎ হয়ে গেলে চিন্তার কিছু নেই।
সঠিক রুটিন, হালকা খাবার এবং মোবাইল ব্যবহার সীমিত রাখলে ঘুম আরও উন্নত হবে।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মনের রঙের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url